স্বামী কর্তৃক স্ত্রী তালাক দিতে পারে কিভাবে
হাঁ। স্বামী তাঁর স্ত্রীকে তালাক দিতে পারে কোন কারণ যুক্ত করে কাজী অফিস মাধ্যমে।
স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার নিয়ম :
স্বামী তাঁর স্ত্রীকে তালাক দিতে ইচ্ছা করিলে তালাক উচ্চারণ করিবার পরেই সে তালাক দিয়েছে বলিয়া পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদের (স্ত্রী যে এলাকায় থাকে) মেয়র/চেয়ারম্যান কে লিখিত তালাক নোটিশ (রেজিস্ট্রিকৃত ডাকযোগে) প্রেরণ করতে হবে এবং স্ত্রীকে উহার একটি অনুলিপি বা কপি পাঠাইবে।
মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১ কি আছে দেখুন
মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১ অনুসারে তালাক দিতে চাইলে এই আইনের ৭ ধারা মতে তালাক দিতে হবে।
পোস্ট অফিসে চিঠি রেজিস্ট্রি করার পর পোস্ট অফিস নিধারিত সময়ে চেয়ারম্যান এবং স্ত্রীর ঠিকানায় চিঠি ২টি প্রেরণ /পাঠাইবেন।
চেয়ারম্যান/মেয়র, ইউনিয়ন পরিষদ/পৌরসভা :
ডাক পিয়ন ইউনিয়ন/পৌরসভায় উপস্থিত হয়ে চেয়ারম্যান/মেয়র বরাবর চিঠি টি প্রদান করলে ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষ রেজিস্ট্রি চিঠিটি গ্রহণ করবেন এবং চিঠি টি ইউনিয়ন পরিষদ তাদের চিঠি রেজিস্টার বহিতে লিপিবদ্ধ করবেন।
স্ত্রী ঠিকানায়:
ডাক পিয়ন স্ত্রীর ঠিকানায় উপস্থিত হয়ে স্ত্রী বরাবর চিঠি টি প্রদান করলে স্ত্রী রেজিস্ট্রি চিঠিটি গ্রহণ করবেন। উল্লেখ: স্ত্রী চিঠিটি গ্রহণে অস্বীকৃতি বা গ্রহণ না করলে ডাক পিওন চিঠিটি ফেরত নিবেন এবং ফেরত চিঠি হিসাবে স্বামী কে প্রদান করবেন।
পৌরসভা /ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক সালিসি পরিষদ গঠন ও তালাক বিষয়ে সিদ্ধান্ত :
পৌরসভা / ইউনিয়ন পরিষদ প্রাপ্ত তালাক নোটিশ গ্রহণ করার পর ৯০ দিনের মধ্যে সালিসি পরিষদ গঠন করবেন (শর্ত: স্ত্রী গর্ভবতী থাকলে তালাক কার্যকর হবে না) এবং স্বামী ও স্ত্রীকে সালিসি পরিষদে নিদিষ্ট তারিখে উপস্থিত/হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ প্রদান করবেন। (সালিসি পরিষদ ৩ বার নোটিশ ইস্যু করতে পারবেন) উল্লিখিত তারিখে স্বামী-স্ত্রী সালিসি পরিষদে সমঝোতা বা আপোষ মীমাংসা করার চেষ্টা করবেন। স্বামী স্ত্রী যেকোনো (হাঁ /না) সমঝোতা বা আপোষ মীমাংসা হলে ভালো, ঐ দম্পতি সমঝোতা বা আপোষ মীমাংসা করে সংসার জীবন আবারো করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে তালাক টি প্রত্যাহার করতে হবে। ঐ দম্পতির দাম্পত্য নিয়ে আপোষ মীমাংসা না হলে বা স্বামী-স্ত্রী উভয়ে সংসার করতে না চাইলে প্রেরিত তালাক নোটিশ ৯০ দিন পর তালাক কার্যকর হবে। এই তালাক কার্যকর হলে স্ত্রী দেনমোহর পাওয়ার অধিকারিণী হইবে।
(এখানে পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদে গঠিত সালিসি পরিষদে স্বামী অথবা স্ত্রী কে হাজির হওয়ার নিদিষ্ট তারিখে যে কেউ (স্বামী স্ত্রী) ঐ সালিসি পরিষদে উপস্থিত বা হাজির না হন তাহলে পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ এর কোন কিছু করার নাই বা গঠিত সালিসি পরিষদে উপস্থিত বা হাজির হওয়া স্বামী বা স্ত্রীর জন্য বাধ্যতামূলক নয়।)
স্বামী / তালাক দাতা: (নিজের জন্য তালাক নোটিশ কপি )
স্বামী বা তালাক দাতা নিজের কাছে ১ কপি রাখবেন বা সংরক্ষণ করবেন।
কাজী অফিসে তালাক রেজিস্ট্রি : (৩ নং কাজীর জন্য তালাকের নোটিশ)
কাজী অফিস বা বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রি অফিস গিয়ে তালাক রেজিস্ট্রি করতে হবে এজন্য তালাক নোটিশের ১ কপি কাজী অফিসে দিয়ে তালাক রেজিস্ট্রি করে নিতে হবে। তালাক রেজিস্ট্রি বিবাহ রেজিস্ট্রি মতোই গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট।
কিছু সতর্ক বার্তা:
তালাক রেজিস্ট্রি/নিবন্ধন এবং পোস্ট অফিসের স্লিপ বা টোকেন তালাক এর গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট কারণ অনেক সময় দাম্পত্য বিষয় নিয়ে দেনমোহর খোরপোষ /নারী শিশু /যৌতুক মামলা মোকাদ্দমা হলে আদালত তালাক হয়েছে/দিয়েছে জানতে চাইলে স্ত্রী আদালতে হাজির হয়ে যদি জানান তালাক নোটিশ পাইনি বা অস্বীকার করে তখন স্বামীকে তালাক রেজিস্ট্রি/ নিবন্ধন এবং পোস্ট অফিসের স্লিপ বা টোকেন আদালত দেখাতে হয়। তাই এগুলো সযত্নে রাখবেন। (উল্লেখ্য মূলত ইউনিয়ন পরিষদ তালাক নোটিশ গ্রহণের পর হতে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে তালাক বিষয়ে সিদ্ধান্ত এবং তালাক কার্যকর গণনা সময় ধরা হয়।
ধন্যবাদ
স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার নিয়ম :
স্বামী তাঁর স্ত্রীকে তালাক দিতে ইচ্ছা করিলে তালাক উচ্চারণ করিবার পরেই সে তালাক দিয়েছে বলিয়া পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদের (স্ত্রী যে এলাকায় থাকে) মেয়র/চেয়ারম্যান কে লিখিত তালাক নোটিশ (রেজিস্ট্রিকৃত ডাকযোগে) প্রেরণ করতে হবে এবং স্ত্রীকে উহার একটি অনুলিপি বা কপি পাঠাইবে।
মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১ কি আছে দেখুন
মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১ অনুসারে তালাক দিতে চাইলে এই আইনের ৭ ধারা মতে তালাক দিতে হবে।
তালাক নোটিশ
মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১ অনুসারে তালাক দিতে চাইলে ৭ ধারা এর ১ উপধারা মতে উপরের মত তালাক নোটিশ টি চেয়ারম্যান এবং স্ত্রীর নিকট প্রেরণ করতে হবে :
এবং সতর্ক করা হয়েছে এই আইনের ৭ ধারা এর ২ উপধারা মতে তালাক নোটিশ চেয়ারম্যান এবং স্ত্রীর নিকট প্রেরণ বা না পাঠাইলে ১ বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
এবং সতর্ক করা হয়েছে এই আইনের ৭ ধারা এর ২ উপধারা মতে তালাক নোটিশ চেয়ারম্যান এবং স্ত্রীর নিকট প্রেরণ বা না পাঠাইলে ১ বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
তালাক নোটিশ টি ৪টি কপি হবে: ফটোকপি অথবা কার্বন কপি
(উপরের মত) ৪টি কপি ৪ জনের কাছে দিতে হবে
১. চেয়ারম্যান বরাবর পাঠাইবেন (অবশ্যই ) ১ টি
২. স্ত্রী বরাবর পাঠাইবেন (অবশ্যই ) ১ টি
৩. নিজের কাছে রাখবেন ১ টি
৪. কাজী অফিস (বিবাহ / তালাক রেজিস্টার ) ১ টি
(উপরের মত) ৪টি কপি ৪ জনের কাছে দিতে হবে
১. চেয়ারম্যান বরাবর পাঠাইবেন (অবশ্যই ) ১ টি
২. স্ত্রী বরাবর পাঠাইবেন (অবশ্যই ) ১ টি
৩. নিজের কাছে রাখবেন ১ টি
৪. কাজী অফিস (বিবাহ / তালাক রেজিস্টার ) ১ টি
চেয়ারম্যান নিকট প্রেরনের জন্য (মূলকপি) তালাক নোটিশ টি খামে ভরান এবং স্ত্রী নিকট প্রেরনের জন্য (স্ত্রীর কপি) তালাক নোটিশ খামে ভরানোর পর খামের উপর সঠিক নাম ঠিকানা লিখুন তারপর পোস্ট অফিসে যান।
(নিচের ছবির মত )
পোস্ট
অফিসে গিয়ে চিঠি ২টি চেয়ারম্যান এবং স্ত্রীর ঠিকানায় রেজিস্ট্রি করুন:
রেজিস্ট্রি করার সময় পোস্ট অফিস আপনার কাছ থেকে রেজিস্ট্রি ফি বা
রেজিস্ট্রির টাকা নিয়ে আপনাকে স্লিপ বা টোকেন দিবেন। (স্লিপ বা টোকেন
সযত্নে সংরক্ষণ করবেন এটাই তালাক নোটিস প্রেরণ/ পাঠানোর গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট /উপাদান)। চেয়ারম্যান/মেয়র, ইউনিয়ন পরিষদ/পৌরসভা :
ডাক পিয়ন ইউনিয়ন/পৌরসভায় উপস্থিত হয়ে চেয়ারম্যান/মেয়র বরাবর চিঠি টি প্রদান করলে ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষ রেজিস্ট্রি চিঠিটি গ্রহণ করবেন এবং চিঠি টি ইউনিয়ন পরিষদ তাদের চিঠি রেজিস্টার বহিতে লিপিবদ্ধ করবেন।
স্ত্রী ঠিকানায়:
ডাক পিয়ন স্ত্রীর ঠিকানায় উপস্থিত হয়ে স্ত্রী বরাবর চিঠি টি প্রদান করলে স্ত্রী রেজিস্ট্রি চিঠিটি গ্রহণ করবেন। উল্লেখ: স্ত্রী চিঠিটি গ্রহণে অস্বীকৃতি বা গ্রহণ না করলে ডাক পিওন চিঠিটি ফেরত নিবেন এবং ফেরত চিঠি হিসাবে স্বামী কে প্রদান করবেন।
পৌরসভা /ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক সালিসি পরিষদ গঠন ও তালাক বিষয়ে সিদ্ধান্ত :
পৌরসভা / ইউনিয়ন পরিষদ প্রাপ্ত তালাক নোটিশ গ্রহণ করার পর ৯০ দিনের মধ্যে সালিসি পরিষদ গঠন করবেন (শর্ত: স্ত্রী গর্ভবতী থাকলে তালাক কার্যকর হবে না) এবং স্বামী ও স্ত্রীকে সালিসি পরিষদে নিদিষ্ট তারিখে উপস্থিত/হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ প্রদান করবেন। (সালিসি পরিষদ ৩ বার নোটিশ ইস্যু করতে পারবেন) উল্লিখিত তারিখে স্বামী-স্ত্রী সালিসি পরিষদে সমঝোতা বা আপোষ মীমাংসা করার চেষ্টা করবেন। স্বামী স্ত্রী যেকোনো (হাঁ /না) সমঝোতা বা আপোষ মীমাংসা হলে ভালো, ঐ দম্পতি সমঝোতা বা আপোষ মীমাংসা করে সংসার জীবন আবারো করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে তালাক টি প্রত্যাহার করতে হবে। ঐ দম্পতির দাম্পত্য নিয়ে আপোষ মীমাংসা না হলে বা স্বামী-স্ত্রী উভয়ে সংসার করতে না চাইলে প্রেরিত তালাক নোটিশ ৯০ দিন পর তালাক কার্যকর হবে। এই তালাক কার্যকর হলে স্ত্রী দেনমোহর পাওয়ার অধিকারিণী হইবে।
(এখানে পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদে গঠিত সালিসি পরিষদে স্বামী অথবা স্ত্রী কে হাজির হওয়ার নিদিষ্ট তারিখে যে কেউ (স্বামী স্ত্রী) ঐ সালিসি পরিষদে উপস্থিত বা হাজির না হন তাহলে পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ এর কোন কিছু করার নাই বা গঠিত সালিসি পরিষদে উপস্থিত বা হাজির হওয়া স্বামী বা স্ত্রীর জন্য বাধ্যতামূলক নয়।)
স্বামী / তালাক দাতা: (নিজের জন্য তালাক নোটিশ কপি )
স্বামী বা তালাক দাতা নিজের কাছে ১ কপি রাখবেন বা সংরক্ষণ করবেন।
কাজী অফিসে তালাক রেজিস্ট্রি : (৩ নং কাজীর জন্য তালাকের নোটিশ)
কাজী অফিস বা বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রি অফিস গিয়ে তালাক রেজিস্ট্রি করতে হবে এজন্য তালাক নোটিশের ১ কপি কাজী অফিসে দিয়ে তালাক রেজিস্ট্রি করে নিতে হবে। তালাক রেজিস্ট্রি বিবাহ রেজিস্ট্রি মতোই গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট।
কিছু সতর্ক বার্তা:
তালাক রেজিস্ট্রি/নিবন্ধন এবং পোস্ট অফিসের স্লিপ বা টোকেন তালাক এর গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট কারণ অনেক সময় দাম্পত্য বিষয় নিয়ে দেনমোহর খোরপোষ /নারী শিশু /যৌতুক মামলা মোকাদ্দমা হলে আদালত তালাক হয়েছে/দিয়েছে জানতে চাইলে স্ত্রী আদালতে হাজির হয়ে যদি জানান তালাক নোটিশ পাইনি বা অস্বীকার করে তখন স্বামীকে তালাক রেজিস্ট্রি/ নিবন্ধন এবং পোস্ট অফিসের স্লিপ বা টোকেন আদালত দেখাতে হয়। তাই এগুলো সযত্নে রাখবেন। (উল্লেখ্য মূলত ইউনিয়ন পরিষদ তালাক নোটিশ গ্রহণের পর হতে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে তালাক বিষয়ে সিদ্ধান্ত এবং তালাক কার্যকর গণনা সময় ধরা হয়।
ধন্যবাদ